চীনা নাবিক চেই মো’র গল্প
বিশ দিন পর চেই মো এ নৌকা চালিয়ে উত্তর নিউজিল্যান্ড ঘুরেছেন এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে গেছেন। দশ বর্গমিটারের এ নৌকায় তার সব লাগেজ আছে। নিজের একটি ছোট বাড়ি চালিয়ে তিনি বাতাসের দিক, সমুদ্রের স্রোত, জোয়ারসহ নানা তথ্য শিখেছেন।
২০০৭ সালের ৬ জানুয়ারি চেই মো চীনের রি চাও শহর থেকে রওনা হয়েছেন। দক্ষিণ চীন সাগর থেকে বের হয়ে জাকার্তা, মাদাগাস্কার, কেপ অব গুড হোপ, পানামা অতিক্রম করে মোজাম্বিক চ্যানেল, ক্যারিবিয়ান সাগর ক্রস করে ভারত মহাসাগর, আটলান্টিক মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর অতিক্রম করে ২০০৯ সালের ১৬ আগস্ট রি চাও শহরে ফিরে এসেছেন। মোট ৩৫,০০০ নটিক্যাল মাইল এ যাত্রায় তিনি পারি দিয়েছেন।
ক্যাপ্টেন, নাবিক, ডাক্তার, কুক, মেকানিক ও রক্ষণাবেক্ষণ কর্মী-সব দায়িত্ব চেই মো’কেই পালন করতে হয়েছে। তিনি বলেছেন, সমুদ্রে শুধু নিজের উপর নির্ভর করতে হয়। যার মানে তিনি সব কিছু করতে পারেন। তিনিও স্বীকার করেন, তার কষ্ট লাগে কখনও কখনও। বড় বড় ঢেউ আছড়ে পড়ে, ভয় লাগে, একাকীত্ব আছে, তবে এমন নিঃসঙ্গতা তিনি উপভোগ করেন। চিত্রশিল্পী হিসেবে তিনি নিঃসঙ্গতা পছন্দ করেন।
বর্তমানে নৌ যাত্রার মাধ্যমে তিনি যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছেন, তেমনি তিনি অন্য কিছুও লাভ করেছেন। যাত্রায় তিনি অনেক ছবি তুলেছেন। আইসবার্গ, লেজার, সামুদ্রিক পাখি, তিমি-সবই তার ছবিতে আসে। পাশাপাশি, তিনি জনপ্রিয় বিজ্ঞান রাষ্ট্রদূত হয়েছেন। তিনি আশা করেন, তার যাত্রার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষ সমুদ্র, প্রকৃতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর দৃষ্টি রাখবে।
পালতোলা নৌকা এখনও চীনে জনপ্রিয়। চেই মোকে নতুন স্বপ্ন দেখান। বিশ্বের অনেক বড় আকারের প্রতিযোগিতা ইউরোপে উদ্ভূত হয়। যেমন: ট্যুর ডি ফ্রান্স ও অলিম্পিক গেমস ইত্যাদি। তিনি আশা করেন যে ভবিষ্যতে চীনের উদ্যোগে বিশ্ব পর্যায়ের পালতোলা নৌকা প্রতিযোগিতা আয়োজিত হবে।
পঞ্চাশোর্ধ চেই মো এখনও পালতোলা যাত্রা উপভোগ করছেন। তার মতে, চ্যালেঞ্জ করতে থাকুন, নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে থাকুন এবং সমুদ্রে প্রবাহিত দৃশ্য উপভোগ করতে থাকুন-এর চেয়ে ভালো আর কোনো কিছুই নেই।