জাপানের পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে নিঃসরণ প্রসঙ্গ
অক্টোবর ৩০: ফুকুশিমার পারমাণবিক বর্জ্যপানি প্রশান্ত মহাসাগরে নিঃসরণ শুরুর পর থেকেই আন্তর্জাতিক সমাজ জাপানি সরকারের তীব্র সমালোচনা করছে। অথছ নিজের ভুল আচরণ সংশোধন করার পরিবর্তে, জাপান চীনকে টার্গেট করেছে। একাধিক জাপানি মিডিয়া ‘চীনে জাপান-বিরোধী মনোভাব তীব্র’ এবং ‘জাপানের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক উদ্যোগ নিয়েছে চীনা জনগণ’ শীর্ষক মন্তব্য প্রচার করেছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদাসহ বহু রাজনীতিবিদ চীনকে জাপানি জলজ পণ্যের আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বাতিল করার দাবি জানিয়েছেন। এমনকি, তথাকথিত পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন তাঁরা।
দুই বছর আগে নিজের পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জাপানি সরকার এ সংশ্লিষ্ট ‘প্রচার’ ও ‘হোয়াইটওয়াশ’ কার্যক্রমও চালু করে। জাপানি পুনর্গঠন সংস্থার ২০২১ সালের বাজেটের দিকে তাকালে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনার সাথে সম্পর্কিত জনসংযোগ তহবিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ বিলিয়ন ইয়েনে, যা ২০২০ সালের চার গুণ। জাপানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক বছরগুলোর বাজেটের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ২০২২ ও ২০২৩ সালে পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে ফেলার প্রচারকাজ স্পষ্ঠভাবে জোরদার করা হয়েছে।
পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে ফেলার দিন এনএইচকে জানায়, তথাকথিত ‘মিথ্যাচার’-এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে ৭০ বিলিয়ন ইয়েনের পরিকল্পনা নিয়েছে জাপানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০২০ সালে জাপানের পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমস্যা সমাধানের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ‘প্রচারব্যয়’ পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমুদ্রে ফেলার বাজেটের ২০ গুণ।
জাপানি সরকার পারমাণবিক বর্জ্যপানি সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে অর্থ সাশ্রয় করেছে, তবে প্রচার-প্রচারণার কাজে বেশি ব্যয় করেছে তারা। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের ওপর জাপানের স্ম্যাকডাউনের উদ্দেশ্য হল জনমতকে বিভ্রান্ত করা, নিজেকে ‘শিকার’ হিসেবে উপস্থাপন করা, নিজের পরিবেশগত নিরাপত্তা ও মানবস্বাস্থ্য-পরিপন্থি অপরাধকে ধামাচাপা দেওয়া।